About Us | Contact Us |

SIR গণতন্ত্র ও সাধারণতন্ত্রের পরিপন্থী

SIR গণতন্ত্র ও সাধারণতন্ত্রের পরিপন্থী

গত ২৫ জুন ভারতে জরুরী অবস্থা (এমারজেন্সি) জারির ৫০ বছর ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন, তৎকালীন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে সংবিধানের ৩৫২ অনুচ্ছেদের অধীনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। যা কার্যকরী ছিল ২৫ জুন, ১৯৭৫ থেকে ২১ মার্চ, ১৯৭৭ পর্যন্ত। সেই গণতন্ত্র হরনের সূচনার দিনটিকে (২৫ জুন) স্মরণে রেখে এ বছরও দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ ওই দিনে বিভিন্ন সভাসমিতি করেছেন। বর্তমানে কেন্দ্রের শাসক বিজেপি সরকার অঘোষিত জরুরী অবস্থা জারির মাধ্যমে ভারতবর্ষের জনগণের যে মৌলিক অধিকার খর্ব করছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।

আমরা দেখলাম ওই দিনটিকে (২৫ জুন) সংবিধান হত্যার দিন হিসাবে বিজেপি দলের পক্ষ থেকে পালন করা হল। আবার এটাও দেখা গেল সেই ২৫ জুন তারিখের আগের দিন ২৪ জুন ২৫ তারিখে তাদের নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বিহার নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে নাগরিকদের ভোটাধিকার হরনের লক্ষ্যে এক নয়া ফরমান জারী করল। অর্থাৎ নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হত্যার দিনের সূচনা হল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার সঞ্জয় কুমার বিহারের চিফ ইলেক্টোরাল অফিসারকে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে 'স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন' (Special intensive re-vision সংক্ষেপে SIR) চালু করার নির্দেশ জারী করলেন-যাতে এই বিশেষ নিবিড় সংশোধন ০১/০৭/২৫ তারিখ থেকে কার্যকরী হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হল।

ওই নির্দেশনামার প্রথম প্যারায় উল্লেখ করা হল সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদ এবং 'জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০' (Representation of people Act. 1950 সংক্ষেপে RPA Act.1950.) এর ২১ ধারার ক্ষমতাবলে এই সংশোধন করা হচ্ছে। দ্বিতীয় প্যারায় উল্লেখ করা হল সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ এবং 'জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০' (Representation of people Act.1950) এর ১৬ এবং ১৯ ধারা অনুযায়ী এই সংশোধন করা হবে।

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে আমরা সবাই জানি সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রপতি একজন চীফ ইলেকশন কমিশনার (CEC) সহ বাকি ইলেকশন কমিশনারদের (ECs) নিয়ে ইলেকশন  কমিশন (EC) গঠন করেন এবং তা অবশ্যই ৩ জনের সিলেকশন কমিটির প্রস্তাব অনুযায়ী হতে হবে। এতকাল এই সিলেকশন কমিটিতে থাকতেন ১) দেশের প্রধানমন্ত্রী ২) বিরোধী দলনেতা ৩) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। এটাতে সিলেকশন কমিটির একটা আপাত নিরপেক্ষতার চরিত্র বজায় ছিল। আপাত কথাটা ব্যবহার করা হল কারণ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হলেও তিনি নিরপেক্ষ না থেকে শাসক দলের অনুগতও থাকেন তার একাধিক উদাহরণ কয়েকজন প্রধান বিচারপতির অবসরের পর লক্ষ্যনীয় হয়েছে। তবুও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। যদি কোনও প্রধান বিচারপতি সত্যিই নিরপেক্ষ হন তাহলে ওই সিলেকশন কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী বা শাসক দলের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। তাই সব কিছুকে করায়ত্ত করার নীতি এখানেও প্রতিফলিত হল। আমরা দেখলাম তড়িঘড়ি গত ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য সভায়, ২১ ডিসেম্বর লোক সভায় বিলটি পাশ করিয়ে ২৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে ২ জানুয়ারী ২০২৪ থেকে নতুন আইন লাগু করা হল- Chief Elec-tion Commissioner and other Election Commis-sioners (Appointment- Conditions of Service and Term of Office) Act-2023.

এই আইনের ৭ নাম্বার ধারায় স্পট করে বলা হল-

an election Commissioner is appointed by the president of India on the recommendation of a selection committee headed by the prime minister and consisting of the leader of opposi-tion in Lok Sabha and a member of the Union Council of Ministers to be nominated by the prime minister.

এখানে সিলেকশন কমিটির নিরপেক্ষতার প্রশ্ন আর থাকল না, সরাসরি প্রধানমন্ত্রী সহ শাসক দলের ২জন আর একজন বিরোধী দলনেতা- এই ৩জনই শেষ কথা। এই শাসক দলের সংখ্যা গরিষ্ঠ সিলেকশন কমিটি যে ইলেকশন কমিশন গঠন করবে তা শাসক দলের নির্দেশ মত চলতে বাধ্য। তাই আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে সংবিধানে উল্লেখিত অর্থনৈতিক-সামাজিক ন্যায় পাওয়ার অধিকার থেকে সব চাইতে যারা বঞ্চিত- মহিলা, যুব তথা দরিদ্র ভূমিহীন শ্রমিক-কৃষকদের ভোট দেওয়ার রাজনৈতিক অধিকারকেও কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল।

ইলেকশন কমিশনের নির্দেশনামার প্রথম প্যারায় উল্লেখিত সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদ এবং 'জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০' (Representation of people Act.1950 সংক্ষেপে RPA Act. 1950.) এর ২১ ধারা প্রসঙ্গে সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে (১) নির্বাচনের তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকবে। (২) সংবিধানের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রতিটি রাজ্যের সংসদ ও আইনসভার সকল নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির পদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ এবং পরিচালনার তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণ একটি কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকবে (এটি সংবিধানে নির্বাচন কমিশন নামে পরিচিত)।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০ (Representation of the People Act-1950) এর ২১ ধারাটি মূলত সংসদ এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ধারাটি নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের যোগ্যতা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে। সংক্ষেপে, ২১ ধারাটি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি কাঠামো প্রদান করে।

নির্দেশনামার দ্বিতীয় প্যারার সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০ (Representation of the People Act-1950)-এর ১৬ এবং ১৯ নাম্বার ধারা প্রসঙ্গে-৩২৬ অনুচ্ছেদে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভার প্রতিনিধি

নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে, ভোট দেওয়ার অধিকার রাখেন, যদি তারা আইন দ্বারা অযোগ্য না হন।

জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হয়। ৩২৬ অনুচ্ছেদ হল ভারতের নির্বাচনী গণতন্ত্রের মেরুদণ্ড,যা নিশ্চিত করে যে শাসন জনগণের জন্য,জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্যই পরিচালিত হয়। এটি সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে ভোটদানের অধিকার প্রদান করে।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০ (Representation of the People Act-1950)-এর ধারা ১৬-তে ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং তাতে অন্তর্ভুক্তির নিয়মাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই ধারায় ভোটার হওয়ার যোগ্যতা, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়েছে।

১৯৫০ সালের জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইনের ১৯ নম্বর ধারাটি নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা তৈরি, এবং সংসদ ও রাজ্য আইনসভার আসন বণ্টন সম্পর্কিতবিষয়গুলোকে নির্দিষ্ট করে। ভোটার তালিকা তৈরি, সংশোধন এবং এই সংক্রান্ত নিয়মকানুন এই ধারায় আলোচনা করা হয়েছে। যোগ। প্রত্যেক নাগরিক যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তার জন্য ভোটার তালিকা তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।

'স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন' (Special intensive re-vision সংক্ষেপে SIR)- প্রসঙ্গে-ভোটার তালিকা সংশোধন- এটা স্বাভাবিক এবং নিয়মিত ভাবে চলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। মৃতদের বা অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়া নাগরিকদের নাম বাদ দেওয়া এবং নতুন নাম যুক্ত করা এগুলো স্বাভাবিক। কিন্তু এক্ষেত্রে বিষয়টা একেবারেই অন্যরকম, এখানে বিশেষ নিবিড় সংশোধনের মধ্য দিয়ে তালিকা প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছে। ২০০৩ সালে বিহারে এ ধরনের নিবিড় সংশোধনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। তখন প্রায় ৭/৮ মাস সময় লেগেছিল এই সংশোধন প্রক্রিয়া চালাতে। তখন প্রায় ৫ কোটি মানুষ ভোটার তালিকায় ছিলেন। এখন প্রায় ৮ কোটি মানুষ এই তালিকায় আছেন। কমিশন এক মাসের মধ্যে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ করবে বলে জানিয়েছে। যা বাস্তবে অসম্ভব।

২৫ জুন থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে সকল নাগরিকরা ফর্ম জমা করবে। ২৭ থেকে ৩১ জুলাই জমা পড়া ফর্মের ওপর ভিত্তি করে ভোটার তালিকার খসড়া প্রস্তুত করবে এবং ১ আগস্ট তা প্রকাশ করবে। ১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টম্বর খসড়া তালিকার ওপর নাগরিকরা দাবি বা অভিযোগ (claim and objection) জানাতে পারবে। ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিমার্জিত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

এই নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় সকল নাগরিককে এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration Form) পূরণ করা বাধ্যতামূলক। এই ফর্মে যে বিষয়গুলো থাকছে তা হল- (ক) ১) পুরনো ও বর্তমান ছবি। ২) জন্ম শংসাপত্র। ৩) ভোটার কার্ডের নাম্বার। ৪) আধার কার্ডের নাম্বার (ঐচ্ছিক)। (৫) বাবা, মা, স্ত্রী/স্বামীর ভোটার কার্ডের নাম্বার। ৬) বয়স ১৮ বছর তার প্রমাণপত্র।

(খ) ১ জুলাই ১৯৮৭-র আগে জন্মগ্রহণ করলে নিম্নলিখিত

(ঙ) নথিগুলির একটি জমা করতে হবে।

(গ) ১ জুলাই ১৯৮৭ থেকে ২ ডিসেম্বর ২০০৪ এর মধ্যে জন্মগ্রহণ করলে বাবা অথবা মা এর নিম্নলিখিত (ঙ) নথিগুলির একটি জমা দিতে হবে।

(ঘ) ২ ডিসেম্বর ২০০৪ এর পর জন্মগ্রহণ করলে বাবা এবং মা উভয়ের নিম্নলিখিত-
(ঙ) নথিগুলির একটি জমা দিতে হবে।

(ঙ) ১১টি নথি-

(নিচের দলিলগুলি ০১.০১.২০০৩ বা তার পূর্বে জারি হয়ে থাকলে তা গ্রহণযোগ্য বলে ধরা হবে।)

১) কেন্দ্র/রাজ্য সরকার/পিএসইউ দ্বারা ইস্যু করা পরিচয়পত্র/চাকরির নিয়োগপত্র/পিআরও আদেশ। ২) সরকারি/ আধা-সরকারি সংস্থা/ব্যাংক/ডাকঘর/এলআইসি/ পিএসইউ দ্বারা ০১.০৭.১৯৮৭ এর পূর্বে ইস্যু করা যে কোনও পরিচয়পত্র/ সনদ/দলিল। ৩) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা জন্মসনদ। ৪) পাসপোর্ট। ৫) স্বীকৃত বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইস্যু করা মেট্রিকুলেশন/শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ। ৬) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ দ্বারা ইস্যু করা স্থায়ী নিবাসের সনদপত্র। ৭) আয় সংক্রান্ত প্রমাণপত্র। ৮) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা ওবিসি/এসসি/ এসটি কাস্ট সার্টিফিকেট। ৯) পুরসভা/নাগরিক রেজিস্টার (যেখানে রেকর্ড আছে)। ১০) স্থানীয়/রাজ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা পারিবারিক রেজিস্টার। ১১) সরকারের নামে ভূমি সংক্রান্ত অর্ডার/প্রমাণপত্র।

অত্যন্ত আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করার বিষয়, যে সকল নথিপত্র বেশীরভাগ মানুষের কাছে পাওয়া সম্ভব যেমন- ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জব কার্ড ইত্যাদি নথিগুলিকে গ্রহণ যোগ্য ধরা হল না। যদিও ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে প্রথম ৩টি নথিকে বিচারে‍্যর মধ্যে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আসলে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি চলছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিশাল অংশের এক শ্রমজীবী মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়াটাই আসল উদ্দেশ্য। যা আগামীতে পশ্চিমবাংলা সহ বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালেও কার‍্যকরী করা হতে পারে।

সংবিধানের ৩২৪, ৩২৬ অনুচ্ছেদ এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০-এর ১৬ ১৯, ২১ ধারাতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করে ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে মৌলিক ভূমিকা পালন করার কথাই বলা হয়েছে। এটি প্রতিটি যোগ্য নাগরিককে শাসনব্যবস্থায় সমান অধিকার প্রদানের মাধ্যমে সংবিধানের প্রস্তাবনার ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সমতা এবং ভ্রাতৃত্বের লক্ষ্যগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ১৮ বছর এবং তার বেশি বয়সী সকল নাগরিককে ভোটাধিকার প্রদান করার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সমতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ জোরদার করতে জনগণকে তাদের নেতা নির্বাচনের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থায় ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে।

এই সার্বজনীন ভোটাধিকারের ধারণাটিকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার হরনের ষড়যন্ত্র চলছে, যা সংবিধানের প্রস্তাবনার গণতন্ত্র সাধারণতন্ত্র বা প্রজাতান্ত্রিক মৌলিক ধারনার পরিপন্থী। অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে নাগরিকদের সচেতন করা সময়ের দাবি।

ঋণ: সোশাল জাস্টিস।

দিবাকর ভট্টাচার্য
দিবাকর ভট্টাচার্য

বিশিষ্ট আইনজীবী